Home STORY অনুভূতি (পর্ব _৮)
Home STORY অনুভূতি (পর্ব _৮)

অনুভূতি (পর্ব _৮)




#পর্ব-০৮


সময় প্রবহমান।কারো জন্য থেমে থাকেনা।ঘড়ির কাঁটার সাথে তাল মিলিয়ে নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকে আমাদের জীবন।দেখতে দেখতে কেটে গেছে আড়াই মাস।

আজকেই শেষ হয়েছে মিহুর প্রি-টেস্ট পরীক্ষা।ব্যস্ত সময় কেঁটেছে তার।পড়াশোনায় সে মাঝামাঝি ধরণের স্টুডেনট।

বস্তুত ভালো করতে হলে পড়তেই হবে এই কথায় বিশ্বাসী সে।

পরীক্ষা দিয়ে কলেজ থেকে ফিরেই গোসলে ঢুকেছে।একঘন্টার যাবত শান্তিময় গোসল দিয়ে চুলে তোয়ালে পেচিয়ে বেরিয়ে এলো সে।পরীক্ষা বেশ ভালো হয়েছে আজকে,মনটা ফুরফুরে।আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল মুছছে আর গুনাগুন করে গাইছে-

"ও বেবি কাম কাম কাম কাম কাম কাম টু মি..

ও বেবি কাম কাম কাম কাম কাম কাম টু মি..ওওওওও

আমি তোমার হিরো হলে তুমি সুপারহিট...

ও বেবি...


আরো গাওয়ার আগেই সাদিফের ধমকে চমকে পিছে ফিরলো সে।


-"ওই কি বলোস তুই এইগুলা?"


মিহু ফিচলে হেসে বললো,


-"এটাতো গান ভাইয়া।"


সাদিফ চোখমুখ কুচকে তাকায়।মৃদু ঝাড়ি দিয়ে বলে,


-"এটা কেমন গোঁছের গান?...বাদ দে,তুই যেমন তোর গানও সেরকমই।


মিহু তেড়ে উঠে বলে,


-"আমি কেমন হ্যাঁ?তোমাকে কেউ বলসে আমার গান শুনতে?"


সাদিফ এসে কান টেনে ধরে মিহুর।মিহু চিল্লিয়ে বলে,


-"মাআআআ,দেখে যাও তোমার ছেলে আমাকে মারে"


সাদিফ দিগুন চিল্লিয়ে বলে,


-"হ্যাঁ আসো,দেখো তোমার মেয়ে "বেবি বেবি"গান গায়।আবার কাম টু মি কাম টুমি করে।আরো কি সব যে বলে!!


নাজিফা বেগম রান্নাঘর থেকেই চিল্লিয়ে বলে,


-"তোরা থামবি?সাদিফ তুই না বড়?মারিস কেনো?ছাড়বি নাকি আমি আসবো?


সাদিফ একটা মোচর দিয়ে ছেড়ে দিয়ে বলে,


-"না থাক আসা লাগবেনা।ছেড়ে দিসি।"


মিহু একহাতে কান ঘঁষতে থাকে।ব্যাথা হয়ে গেছে।বিরবির করে বলে,

-"ফালতু,অসহ্যকর।"


-"কি বললি?"


মিহু ঝামটা দিয়ে বলে,

-"কিছুনা।...তুমি কি কাজে এসেছো?"


-"ওহ্,হ্যাঁ।আমি বলতে আসছিলাম যে,রাতে রেডি থাকিস তুই।আমার সাথে একটা দাওয়াতে যাবি।"


-"কিসের দাওয়াত?আমি যাবোনা।"


সাদিফ মিহুর মাথায় চাঁটি মেরে বলে,


-"তুই যাবি,তোর বাপ যাবে।...না থাক বাপ যাওয়ার দরকার নাই।তুই গেলেই হবে।এন্ড ইটস্ ফাইনাল।বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।


মিহু মুখ ভেংচিয়ে চুল মুছতে থাকে।।এই কয়েকমাস পড়তে পড়তে ক্লান্ত সে।এখন একটা শান্তির ঘুম দিবে।


সন্ধ্যা ৭ টা...


মিহু রেডি হচ্ছে।একটু আগেই গভীর ঘুম থেকে টেনেটুনে তাকে তুলেছে সাদিফ।চোখে এখনো ঘুম ঘুম ভাব।


একটা কালো রংয়ের লং গাউন পরে নিলো ও।জামার ওড়নাটা লাল রংয়ের।তাই মিলিয়ে একটা লাল হিজাব 

পড়লো।হালকা একটু পাউডার দিয়ে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে নিল।ফোনটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হলো সে।


সাদিফ সোফায় বসে ওর জন্য অপেক্ষা করছে।মিহু কাছে যেয়ে বললো,


-আমি রেডি।চলো।


সাদিফ একনজর তাকিয়ে উঠতে উঠতে বললো,


-বাহ্।তোর তো খুব কম সময় লাগে তৈরি হতে।মেয়ে দের তো সাজ গোজ করতেই ঘন্টা পার হয়ে যায়।


মিহুর মুখে চওড়া হাসি ফুটে ওঠে।সাদিফ তার প্রশংসা বরাবরই খুব কম করে।হাসি হাসি মুখ নিয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিল সে।তার আগেই সাদিফ বলে,


-তোকে তো ভালোই দেখাচ্ছে।কি রে পেত্নী?মেক-আপ করেই ঘুমিয়েছিলো নাকি?


দপ করে নিভে যায় মিহু।কিছু না বলে রাগী ফেস নিয়ে হন হন করে বেরিয়ে যায় সে।

সাদিফ হাসে।বোনটা তার বাচ্চাই রয়ে গেলো!!!


_____________

-আম্মু,আজকে কিন্তু ও আসবে।


রুবিনা আহমেদ ছেলের কথায় ফিরে তাকায়।মৃদু হেসে বলে,


-আর কয়বার বলবি?


অভি ঠোঁটের কোঁণে মৃদু হাসি ফুটিয়ে বলে,


-ও কিন্তু বাচ্চা মেয়ে মা।উল্টা পাল্টা কিছু বললে তুমি কিছু মনে করোনা।


-মনে করবোনা মানে?আমার ছেলেকে পাগল করে ফেলেছে।ওকে তো আমি আচ্ছা মতোন বকে দেবো।


-আচ্ছা বকে দিও।


অভি চলে যেতেই রুবিনা আহমেদ স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে।মেয়েটাকে দেখার খুব শখ তার।অভির মতো বদমেজাজি রাগী ছেলেও যে কাওকে এতটা ভালোবাসে ভাবতেই অবাক লাগে রুবিনার।

_____________


-কোথায় যাচ্ছি আমরা?মানে কার বাসায়?কিসের দাওয়াতে?


সাদিফ শান্ত কন্ঠে বলে,


-অভির বাসায়।ওর মায়ের জন্মদিন আজকে।সেখানেই যাচ্ছি।


মিহু থমকে যায়।অভির সাথে তার দেখা হয়না প্রায় দুইমাস।কতবার অভির ফোনে কল করতে যেয়েও করেনি সে।ভাবত কল করে কি বলবে?"আপনাকে মনে পরছিলো"।একটু কেমন শোনায় না?তাই আর করা হতো না।

আজকে এতোদিন পরে দেখা হবে।কেমন অদ্ভুত লাগছে মিহুর।আচ্ছা,এমন কেনো লাগছে?


.....

Comments

You May Also Like